ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতে শুভসূচনা বাংলাদেশের


chandpurnews24 প্রকাশের সময় : মার্চ ২৭, ২০২৩, ১:৫৩ অপরাহ্ন /
ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতে শুভসূচনা বাংলাদেশের

বৃষ্টির কারণে আইরিশদের যে লক্ষ্য দাঁড়ায় তাতে ওভারপ্রতি ১৩ করে রান প্রয়োজন ছিল পল স্টার্লিংদের। এমন লক্ষ্যেও শুরুটা ভালোই করেছিল আইরিশরা। ওপেনারদের ঝোড়ো শুরুতে দুই ওভারে ৩২ রান আসে সফরকারীদের। তবে এরপরই রানের লাগাম টেনে ধরেন বাংলাদেশি বোলাররা। আসে দ্রুত কিছু উইকেটও। তাতে শেষ পর্যন্ত আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি আয়ারল্যান্ড। জয় দিয়েই টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করল সাকিব আল হাসানের দল।

সোমবার (২৭ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ডকে ২২  রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

ওয়ানডে সিরিজে শতভাগ সাফল্যের পর বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান করার। কিন্তু বৃষ্টিতে পণ্ড হয় সে সুযোগ। ডিএলএস মেথডে আইরিশদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় আট ওভারে ১০৪ রানের। সেই লক্ষ্য তাড়ায় ৫ উইকেটে ৮১   রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস। 
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ঝোড়ো ব্যাটিং দিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। প্রথম দুই ওভারে ২৫ রানে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। এই রেশ থাকে পুরো পাওয়ারপ্লেজুড়ে। আইরিশ বোলারদের তুলোধুনো করে ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮১ রান সংগ্রহ করে লাল-সবুজের দল।
ষষ্ঠ ওভারটিতে বাউন্ডারির ফুলঝুড়ি ফোটান রনি তালুকদার। এক ছক্কা ও তিন চারের মাধ্যমে তিনি ওই ওভারটিতে ১৯ রান সংগ্রহ করেন। আর এতেই টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৬ রান। যা ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়েন লিটন-রনিরা।  
রেকর্ড গড়ার পরে আউট হন লিটন। ৭.১ ওভারে দলীয় ৯১ রানে আউট হন তিনি। তার আগে ২৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা মেরে ৪৭ রান করেন তিনি। অর্ধশতক মিস করলেও রেকর্ড মিস করেননি লিটন। এদিন বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম দেড় হাজার রানের রেকর্ড গড়েন। ৬৮ ইনিংসেই দেড় হাজার রান করে ছাড়িয়ে গেছেন তামিম ইকবালকে। সমান সংখ্যক রান করতে তামিম ইকবালের লেগেছিল ৭১ ইনিংস।

লিটনের অর্ধশতক না পাওয়ার দিনে বাংলাদেশের হয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন রনি তালুকদার। লিটনের ওপেনিং পার্টনার ২৩ বলে পূরণ করেছেন অর্ধশতক। বলের হিসাবে এটি বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় দ্রুততম অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৬৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে থামেন রনি। গ্রাহাম হিউমের ফুল লেংথের বলটা যতটা ভেবেছিলেন, ততটা ওঠেনি। পুরোপুরি মিস করে বোল্ড হন রনি। তার ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছয়ের মার।
ব্যাট হাতে এদিন ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। ট্যাকটরের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হওয়ার আগে করেন মাত্র ১৪ রান। তবে সেকেন্ড ডাউনে সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগিয়েছেন শামিম হোসেন। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই মারকুটে ব্যাটার ২০ বলে খেলেছেন ৩০ রানের দারুণ এক ইনিংস। আদায়ারের বলে স্টার্লিংয়ের হাতে ধরা পড়ার আগে ২টি চার ও ১টি ছয় হাঁকান তিনি।
রনি-শামিমের বিদায়ের পর সাকিব-তাওহিদ হৃদয় মিলে বাংলাদেশকে ২০০ পার করেন। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ৬ মেরে ২০০ পূর্ণ করেন তাওহিদ।

তবে ক্রেইগ ইয়ংয়ের পরের বলেই ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ৮ বলে ১৩ রান করেন হৃদয়। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকানো সাকিব এদিন ১৩ বলে ২০ রান করে অপরাজিত থাকেন। এরপরই নামে বৃষ্টি।
বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ আর ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পায়নি। দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে আয়ারল্যান্ডও হারায় ১২ ওভার। আট ওভারে তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০৪ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চমকে দেন দুই আইরিশ ব্যাটার। মারকুটে ব্যাটিংয়ে প্রথম দুই ওভারে দলকে প্রয়োজনের থেকেও এগিয়ে রাখেন আইরিশ ওপেনাররা। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন হাসান মাহমুদ। মাত্র ৫ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন প্রথম উইকেট।
পরের ওভারে তাসকিনও জাদু দেখান। একই ওভারে তুলে নেন তিন আইরিশ ব্যাটারের উইকেট। সাকিব আল হাসান ষষ্ঠ ওভারে এসে দেন পাঁচ রান। তাতেই ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে তাসকিন আরও একটি উইকেট নেন। তাতে শেষ পর্যন্ত ৮১ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস।